[শরৎচন্দ্র] শরৎচন্দ্রের জীবনী | শরৎচন্দ্রের উপন্যাস | শরৎচন্দ্রের প্রেমের কবিতা | শরৎচন্দ্রের জীবন কাহিনী

 [শরৎচন্দ্র] শরৎচন্দ্রের জীবনী | শরৎচন্দ্রের উপন্যাস | শরৎচন্দ্রের প্রেমের কবিতা | শরৎচন্দ্রের জীবন কাহিনী


জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র


যাহার অমর প্রাণ প্রেমের আসনে 

ক্ষতি তার ক্ষতি নয় মৃত্যুর শাসনে । 


  • শরৎচন্দ্রের উপন্যাস
  • শরৎচন্দ্রের প্রেমের কবিতা
  • শরৎচন্দ্রের ছোট গল্প pdf
  • শরৎচন্দ্রের উপন্যাস pdf
  • শরৎচন্দ্রের ছোট গল্প
  • শরৎচন্দ্রের নারী চরিত্র
  • শরৎচন্দ্রের ছদ্মনাম
  • শরৎচন্দ্রের দেবদাস উপন্যাস pdf
  • শরৎচন্দ্রের বিখ্যাত উক্তি
  • শরৎচন্দ্রের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস
  • শরৎচন্দ্রের জীবনী
  • শরৎচন্দ্রের জন্ম-মৃত্যু সন-
  • শরৎচন্দ্রের জন্মস্থান
  • শরৎচন্দ্রের জীবন কাহিনী
  • শরৎচন্দ্রের জন্মস্থান কোথায়


Sarat Chandra Chattopadhyay —


ভূমিকা• রবীন্দ্র প্রতিভার সৌরদীপ্তিতে যখন বাংলার সাহিত্যাকাশ উজ্জ্বল ও ভাস্বর ঠিক তখনই শরৎচন্দ্রের আত্মপ্রকাশ । রবীন্দ্রনাথের বড়াে পরিচয় তিনি কবি , আরশরশ্চন্দ্রের সর্বোচ্চ খ্যাতি হল কথা শিল্পী রূপে । সমাজের বঞ্চিত , নিপীড়িত মানুষদের জন্যই তিনি । লেখনী ধরেছিলেন । এ সম্পর্কে তার নিজের কথা  ঃ “ সংসারে যারা শুধু দিলে পেল না কিছুই , যারা বঞ্চিত , যারা দুর্বল , যারা উৎপীড়িত , মানুষ হয়েও মানুয যাদের চোখের জলের কোনাে হিসেব নিলে না , নিরুপায় দুঃখময় জীবনে যারা ভেবেই পেল না সমস্ত , থেকেও নেতাদের কিছুতেই অধিকার নেই— এদের বেদনাই দিলে আমার মুখ খুলে , এরাইপাঠালে আমাকে মানুষের কাছে মানুষের হয়ে নালিশ জানাতে । ” তাইশরৎসাহিত্যে আমরা লক্ষ করি বঞ্চিত মানবাত্মার করুণ মুখ সব হারানাে মানুষের হাহাকার । আমি বি.এ. তৃতীয় বর্ষের ছাত্র । মহাবিদ্যালয়ের পাঠক্রমের বাইরে কিছু কিছুবই অধ্যয়ন করেছি এর মধ্যে যাঁর লেখা আমার হৃদয় হরণ করেছে , তিনি হলেন বাংলার কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।


বংশ পরিচয়• বাংলা কথা সাহিত্যের সর্বাধিক জনপ্রিয় শিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতার নাম মতিলাল চট্টোপাধ্যায় এবং মাতার নাম ভুবেনশ্বরী দেবী।


 বাল্যকাল ও শিক্ষাঃ ছেলেবেলায় প্যারী পন্ডিতের পাঠশালায় তার সিদ্ধেশ্বর মাষ্টারের বাংলা স্কুলে শরৎচন্দ্র কিছুদিন লেখাপড়া করেন । ছাত্র হিসাবে তিনি ছিলেন মেধাবী । তারপর বিহারের ভাগলপুরে মাতুলালয়ে তার পরবর্তী শিক্ষাজীবন শুরু হয় । ১৮৯৪ সালে সেখানকার তেজনারায়ণ জুবিলী কলেজিয়েট হাইস্কুলে থেকে শরৎচন্দ্র দ্বিতীয় বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । বিখ্যাত সাহিত্যিকও সংবাদপত্র সেবী পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন সেইস্কুলের প্রধান শিক্ষক । তারপর তিনি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন বটে , পড়াশুনাও নিয়মিত করেছিলেন কিন্তু ; এফ.এ. পরীক্ষায় ২০ টাকা ফী জোগাড় করতে পারেননি বলে । তার আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি । স্কুল কলেজে লেখা পড়ার এখানেই ইতি ঘটে ।


 কর্মজীবনঃ পিতার মৃত্যুর পর কোলকাতায় আসেন শরৎচন্দ্র । সেখানে উকিল লালমােহন গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে ওঠেন । তাঁর কাছেই মাসিক ৩০ টাকা বেতনের চাকুরী জুটিয়ে নেন । তারপর ১৯০৩ সালে তিনি বিদেশে পাড়ী দেন । উপস্থিত হন সুদুর ব্রদেশের রেঙ্গুন শহরে । রেলওয়ে অডিট অফিসে তিনি একটা অস্থায়ী চাকুরি জুটিয়ে নেন । এইব্রয় । প্রবাসেশরৎচন্দ্র প্রথমা স্ত্রী শান্তিদেবী এবং তাদের একমাত্র শিশু কন্যাকে হারান দুরন্ত প্লেগ রােগে । তারপর তিনি সেখানেই এক দরিদ্র ঘরের বিধবা কন্যা মােক্ষদাদেবীকে বিবাহ । করেন । পরে তার নাম রাখেন হিরন্ময়ী দেবী । ১৯১৫ সালে তিনি স্বদেশে ফিরে আসেন । আত্মনিয়ােগ করেন নিবিড় সাহিত্য সাধনায় ।


 * রচনা সম্ভার ও সাহিত্য কীর্তিঃ বেশ পরিণত বয়সে শরৎচন্দ্র পরিপক্ক রচনা নিয়ে । বাঙালী পাঠক সাধারণের কাছে উপস্থিত হয়েছিলেন । তবে তার সাহিত্য সাধনা শুরু । হয়েছিল নিতান্ত বাল্য কৈশাের বয়সেই । মাত্র ১৪ বছর বয়সে সহপাঠী বংশীনাথকে নিয়ে । ঐ নামে একটি গল্প লিখে তিনি কুন্তলীন ’ পুরস্কার পান । তার সারস্বত সাধনার শ্রেষ্ঠ ফসল — বড়দিদি ’ , ‘ বিরাজ বৌ ’ , ‘ বিন্দুর ছেলে ’ , ‘ পরিণীতা ’ , ‘ পন্ডিত মশাই ’ , ‘ মেজদিদি , ‘ পল্লীসমাজ ’ , ‘ চন্দ্রনাথ ’ , ‘ বৈকুন্ঠের উইল ’ , ‘ শ্রীকান্ত ’ ( চারপর্বে ) , ‘ দেবদাস ’ , ‘ নিস্কৃতি , চরিত্রহীন ’ , ‘ দত্তা ’ , ‘ গৃহদাহ ’ , ‘ পথেরদাবী ’ , ‘ শেষ প্রশ্ন ’ , ইত্যাদি । এই উপন্যাস গুলাে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে শরৎচন্দ্রকে অমরতার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে । ছােট গল্পেও তিনি খ্যাতির শীর্ষে ছিলেন । মহেশ ’ , ‘ অভাগীর স্বর্গ ’ , ‘ একাদশী বৈরাগী ’ , তাঁর উৎকৃষ্ট ছােট গল্পগুলির মধ্যে অন্যতম ।



 * বৈশিষ্ট্য : শরৎচন্দ্রের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ছিল বিচিত্র । এই অভিজ্ঞতাই হল তার সৃষ্টির মূল কথা এবং জনপ্রিয়তার কারণ । চন্দ্রের স্নিগ্ধ কিরণের মতই শরৎ সাহিত্য সমস্ত মানুষকে আপন করেছে । তিনি ছিলেন সমাজের উৎপীড়িত , নিপীড়িত , বঞ্চিত মানুষের লেখক । তাই তার উপন্যাস , গল্পে আমরা শুনতে পাই বঞ্চিত মানব আত্মার ক্রন্দন ধ্বনি , সামাজিক কুসংস্কার , ধর্মের নামে ভন্ডামি , তথাকথিত সমাজপতিদের মানবতাহীন বিধান প্রভৃতির বিরুদ্ধে শরৎচন্দ্র লেখনী ধারণ করেছিলেন । এক অকৃত্রিম দরদ দিয়ে তিনি তার রচনার চরিত্র গুলিকে অঙ্কণ করেছেন । তাই তাঁর উপন্যাসে আমরা যে কাহিনী পাই , তা আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি । তার সৃষ্ট চরিত্রগুলি সুখ - দুঃখে , মিলন - বিচ্ছেদে গঠিত আমাদের সমাজেরই পরিচিত চেনা মানুষ । পাপীকে নয় , পাপকে , অন্যায়কারীকে নয় , অন্যায়কে তিনি ঘৃণা করতে শিখিয়েছিলেন । এই কৈশাের জীবনে তিনি তার রচনার দ্বারা আমার অনুভূতিকে নাড়া দিয়েছিলেন তীব্রভাবে । তাই তার গল্প উপন্যাস পড়ার সময় মনের ক্যানভাসে ফুটে ওঠে পল্লীর শতছিন্ন , শত জীর্ণ বিশ্বস্ত চিত্র।


 উপসংহারঃ ১৯৩৮ সালের ১৬ ই জানুয়ারী পরাধীন ভারতবর্ষে শরৎচন্দ্রের মৃত্যু হয় । তাঁর মৃত্যুর পর কেটে গেছে অনেক বছর । পরিবর্তন হয়েছে রাষ্ট্রের , পরিবর্তন হয়েছে । মানুষের এবং রুচির ; কিন্তু বাঙালী পাঠকের হৃদয়ে অপরিবর্তিত রয়ে গেছেন শরৎচন্দ্র । রবীন্দ্রনাথের ভাষায় “ তিনি বাঙালীর বেদনার কেন্দ্রে আপন তুলির স্পর্শ দিয়েছেন । সাহিত্যে উপদেষ্টার চেয়ে স্রষ্টার আসন উচ্চে । চিন্তাশক্তির বিতর্ক নয় , কল্পনাশক্তির দৃষ্টিই সাহিত্যে শাশ্বত মর্যাদা পেতে থাকে । কবির আসন থেকে আমি সেই স্রষ্টা , সেই স্রষ্টা শরৎচন্দ্রকে মাল্যদান করি ” বাঙালী পাঠক যুগে যুগে এই মহান সাহিত্যিককে বরণ করে নেবেভক্তির অর্ঘ্য দিয়ে ।


#শরৎচন্দ্রের_জীবনী

Post a Comment

0 Comments